স্বদেশ ডেস্ক:
আফগানিস্তানে তালেবানরা নতুন করে বহু এলাকা দখল করে নিয়েছে। তালেবানদের ধাওয়া খেয়ে তাজাকিস্তান সীমান্তবর্তী এলাকায় আফগান সেনারা পালিয়ে গেছে। এতে কয়েকটি জেলা বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। নিরাপত্তা বাহিনীর যেসব সদস্য পালিয়ে গেছে, তারা তাজাকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছে। তাজাক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে গতকাল এ খবর জানিয়েছে আল জাজিরা।
খবরে বলা হয়, তালেবানদের হামলার প্রেক্ষাপটে তিন শতাধিক আফগান সেনা বাদাখাশান প্রদেশের সীমান্ত দিয়ে তাজাকিস্তানে প্রবেশ করেছে। গতকাল রবিবার তাজাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছে। বিবৃতিতে এটাও বলা হয়, সরকারি আফগান বাহিনীর সদস্যদের তাজাকিস্তান গ্রহণ করেছে। ‘মানববতা ও ভালো প্রতিবেশীর’ দায় থেকে তারা এ কাজ করেছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
এপ্রিলের মাঝামাঝি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আফগানিস্তান যুদ্ধের ইতি টেনে মার্কিন সেনাদের প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলে তালেবানরা নতুন করে শক্তি প্রদর্শন শুরু করে। দেশটির উত্তরাঞ্চলের বেশির ভাগ এলাকা দখল করে নেয়া তালেবানের জন্য বড় ধরনের অগ্রগতি হিসেবে ধরা হচ্ছে। জেলাভিত্তিক হিসেবে ৪২১ জেলার মধ্যে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জেলা বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি নিয়ন্ত্রণ করছে।
উত্তরাঞ্চলের বাদাখাশান প্রদেশের কাউন্সিলর মুহিবুল রহমান জানান, তালেবানরা কোনো ধরনের লড়াই ছাড়াই এই প্রদেশ দখল করে নিয়েছে। অল্পসংখ্যক সেনার ওপর হামলার জন্য তিনি তালেবানদের দোষারূপ করেন। তিনি আরও বলেন, দুর্ভাগ্যবশত বেশির ভাগ জেলা কোনো লড়াই ছাড়াই তালেবান দখল করে নেয়। গত তিনদিনে ১০ জেলা তালেবানরা দখল করেছে- এর মধ্যে ৮টিতে কোনো প্রতিরোধই ছিল না। কয়েক আফগান সেনা, পুলিশ ও গোয়েন্দা সদস্য আত্মসমর্পণ করেন এবং প্রাদেশিক রাজধানী ফাইজাবাদে চলে যান।
এ ছাড়া তালেবানরা কান্দাহারের একটি গুরুত্বপূর্ণ জেলাও দখল করে নিয়েছে। আফগান যুদ্ধের অন্যতম ঘাঁটি বাগরাম থেকে মার্কিন সেনাদের প্রত্যাহারের দুদিন পরই কান্দাহারের পাঞ্জবি জেলা দখল করে নেয় তালেবানরা। এই বাগরাম থেকেই বেশির ভাগ অভিযান পরিচালনা করেছে মার্কিন ও ন্যাটো সেনারা। এমন পরিস্থিতিতে তালেবানদের রুখতে অস্ত্র হাতে তুলে নিচ্ছেন সাধারণ আফগানরা। এতে করে দেশটিতে গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা করছেন অনেক নিরাপত্তা বিশ্লেষক।